কাঁঠালের মুকুল ঝরার সমস্যা ও সমাধান

সোমালিয়া ওয়েব নিউজ; কাঁঠালের মুকুলঝরা সমস্যাটি একটি বড় সমস্যা। কাঁঠালের মুকুল ঝরে পড়ায়, এর ফলন মারাতক কমে যায়। মুকুল আসার সময় একটু সচেতন হলেই মুকুল ঝরা কমানো যায়। তাই কিছু বিষয় জানা উচিত।

★পুষ্টিহীনতাঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য উদ্ভিদের ১৭টি পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন। এর যেকোনো একটির অভাব কিংবা পরিমান বেশী, হলে কাঁঠালগাছ পুষ্টিহীনতায় ভোগে। কাঁঠাল গাছের পুষ্টি নিশ্চত করতে বর্ষার আগে একবার, বর্ষার পরে একবার এবং মুকুল আসার সময় আরেকবার সার দিতে হয়। এজন্য ঠিক দুপুরে গাছের ছায়া যতটুকু স্থান দখল করে ততটুকু স্থান কুপিয়ে সার ছিটিয়ে সেচ, দিতে হয়। এছাড়া সেচ দিতে হয় নিয়মিত।

★সার ব্যবস্থাপনাঃ বর্ষার আগে ও পরে প্রতিবারে ষোল, বছরের বেশী বয়সের কাঁঠাল গাছের জন্য নব্বই থেকে ১০০ কেজি গোবর, দেড় থেকে দুই কেজি ইউরিয়া, এক থেকে দেড় কেজি করে টিএসপি ও এমপি সার দিতে হয়,এবং এর সাথে ২০০ গ্রাম বোরন সার দিতে হবে। মুকুল আসার সময় যেকোনো বয়সের গাছের জন্য, ২০০ গ্রাম করে ইউরিয়া, টিএসপি ও এমপি সার দিতে হয়। এতে মুকুলঝরা কমে যায়।

★সেচ ব্যবস্থাপনাঃ প্রত্যেকবার সার ছিটানোর পর জল সেচ দিতে হয়, শুস্ক মৌসুমে প্রতিদিন নিয়মিত সেচ দিলে গাছের মুকুলঝরা কমে, কাঁঠালের বোঁটা শক্ত হয়, ফল রসালো হয়, রোগবালাইও হয় কম। ফলন হয় বেশি,

কাঁঠালের পোকামাকড়ঃ গাছের বাকলের মাজরা পোকা ও মুকুলের মাজরা পোকা প্রধান। মুকুলের মাজরা পোকা কচি কাগু, ফুলের কুড়ি ও বেড়ে ওঠা ফলের গায়ে গর্ত করে ভেতরে ঢুকে,সেখান থেকে খাদ্য গ্রহণ করে। এতে আক্রান্ত কান্ড দুর্বল হয়ে পড়ে ও কুঁড়ি গুলো শুকিয়ে মরে যেতে থাকে। বাকলের মাজরা পোকা রাতে গাছের বাকল বা ছাল খায়। খাওয়া অংশ নরম আশেঁর মতো দেখায়।। আশেঁর ভেতর দিয়ে পোকাগুলো কাগেু ছোট ছোট সুড়ঙ্গ তৈরি করে ভেতরে ঢুকে। এতে গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। কাঁঠালের উৎপাদনও কম হয়।

পোকামাকড় দমনঃ মুকুলের মাজরা পোকা দমনের জন্য ১০ লিটার জলেতে ৩০ মিলি এবং বাকলের মাজরা পোকার জন্য ৩৫ মিলি ডায়াজিনন-৬০ ইসি মিশিয়ে ২১ দিন পরপর স্প্রে করতে হবে।

★কাঁঠালের রোগঃ ছত্রাকের কারণে কাঁঠালের মুকুল পচা রোগটিই মুকুল ঝরার প্রধান সমস্যা। আক্রান্ত মুকুল প্রথম দিকে ধূসর দেখায়, পরে মুকুলের গায়ে সরু ও লম্বা সাদা ছত্রাক দেখা যায। আক্রান্ত মুকুল শেষে মাটিতে ঝরে পড়ে। গাছে মুকুল আসার পর মুকুল পচা রোগ দেখার সাথে সাথে ডায়থেন এম-৪৫ ওষুধটির চার গ্রাম এক লিটার জলেতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

★হরমোন প্রয়োগঃ নিয়মিত সেচ, মুকুল আসার পর সার দেওয়া, রোগ ও পোকামাকড় দমনে ওষুধ প্রয়োগের পরও যদি মুকুল ঝরে পড়ে তাহলে গাছে ষ্টিমুলেট নামের হরমোন দিতে হবে। এতে স্ত্রী মুকুল বেশি টিকে থাকায় মুকুল ঝরে পড়ে না। কাঁঠালের মুকুলঝরা রোধের জন্য ষ্টিমুলেট হরমোনটি প্রতি লিটার জলেতে তিন মিলি মিশিয়ে মুকুলে স্প্রে করে দিতে হবে দুই থেকে তিনবার।

Loading