সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (RBI) সদ্য প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন শুধু একটি আর্থিক নথি নয়, বরং তা দেশের অর্থনীতির বর্তমান স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার একটি স্পষ্ট দিশানির্দেশও বটে। RBI-এর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, চলতি আর্থিক বছরে ভারত বিশ্বের দ্রুততম হারে বিকাশশীল অর্থনীতির তকমা ধরে রাখবে—এটি নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক।
এই বৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তিগুলির মধ্যে রয়েছে গৃহস্থালির ব্যয় ক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যাংক ও কর্পোরেট সংস্থাগুলির মজবুত আর্থিক কাঠামো এবং সরকারের মূলধনী ব্যয়ের ধারাবাহিকতা। এই তিনটি দিক পরস্পর পরিপূরক—একটি শক্তিশালী চাহিদা যখন উৎপাদন বাড়ায়, তখন ব্যবসা ও শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়, এবং সরকারের পক্ষ থেকে পরিকাঠামো খাতে ব্যয় সেই প্রবৃদ্ধিকে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল করে তোলে।
তবে শুধু অভ্যন্তরীণ বাজার নয়, মুদ্রাস্ফীতির মতো বহির্বিশ্ব-নির্ভর সংকট নিয়ন্ত্রণেও আশার সঞ্চার করেছে RBI। প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছর স্বাভাবিক বর্ষা, খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকা এবং সরবরাহ শৃঙ্খলা ঠিকঠাক কাজ করলে মুদ্রাস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অর্থাৎ, মূল্যবৃদ্ধি যখন মধ্যবিত্তকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করে, তখন সেটিকে রুখে রাখার ইঙ্গিতই দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে এই আশার সঙ্গে বাস্তববোধও জরুরি। বিশ্বজুড়ে ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, আমদানি নির্ভর পণ্যের দামের ওঠানামা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অর্থনীতির সামনে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই থাকছে। RBI-এর এই রিপোর্ট সেই চ্যালেঞ্জগুলিকে অস্বীকার না করে, বরং সচেতনভাবে অগ্রসর হওয়ার বার্তা দিয়েছে।
এই মুহূর্তে প্রয়োজন, কেন্দ্র ও রাজ্য স্তরে নীতিগত স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, এবং গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রতি লক্ষ্য রেখে খরচ ও কর কাঠামো নির্ধারণ। কারণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যদি সমাজের সব স্তরের কাছে পৌঁছাতে না পারে, তবে সেটি শুধু পরিসংখ্যানেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়।
শেষ কথা, ভারত এই মুহূর্তে শুধুমাত্র সংখ্যার দিক থেকে নয়, স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও আত্মনির্ভর অর্থনীতির পথে এগিয়ে চলেছে। RBI-এর রিপোর্ট সেই যাত্রাপথে এক নতুন আশার আলো।

More Stories
বিজ্ঞানচেতনার প্রজ্বলিত প্রদীপ — ড. মেঘনাদ সাহা
অটলজির মতোই কি এবার চাপের মুখে মোদী সরকার?
নীতিশ সরকারের নতুন দান — ২৫ লক্ষ মহিলার ব্যাঙ্কে পৌঁছল ১০ হাজার টাকা