সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মৌমাছির বিষে থাকা প্রধান উপাদান মেলিটিন ল্যাবরেটরি পর্যায়ে আগ্রাসী ধরনের স্তন ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার হ্যারি পারকিন্স ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল রিসার্চ এবং ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া–র গবেষক দল এই আবিষ্কারকে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার বলে মনে করছেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষ করে ট্রিপল নেগেটিভ ব্রেস্ট ক্যান্সার (TNBC) ও HER2-পজিটিভ স্তন ক্যান্সার কোষে মেলিটিন অত্যন্ত দ্রুত কাজ করেছে। নির্দিষ্ট ঘনত্বে প্রয়োগ করলে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ক্যান্সার কোষের ঝিল্লিতে ছিদ্র তৈরি করে প্রায় সম্পূর্ণ কোষ ধ্বংস করে দিয়েছে, অথচ স্বাভাবিক কোষে এর প্রভাব অনেক কম ছিল।
বিজ্ঞানীরা আরও দেখেছেন, মেলিটিন EGFR ও HER2 নামক বৃদ্ধিসংক্রান্ত রিসেপ্টরের ফসফোরিলেশন বন্ধ করে দেয়। এর ফলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধির সংকেত বন্ধ হয়ে যায় এবং টিকে থাকার ক্ষমতা কমে যায়। অন্যদিকে, বাম্বলবি (Bombus terrestris) প্রজাতির মৌমাছির বিষে মেলিটিন না থাকায় তা একইভাবে কার্যকর হয়নি।
এছাড়াও, মাউস মডেলে দেখা গেছে, কেমোথেরাপির প্রচলিত ওষুধ ডকেটাক্সেল–এর সঙ্গে মেলিটিন একত্রে প্রয়োগ করলে টিউমারের বৃদ্ধি আরও কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
গবেষণার অংশ হিসেবে ইমিউনফ্লুরেসেন্স মাইক্রোস্কোপি ব্যবহার করে প্রমাণ করা হয়েছে যে মেলিটিন সরাসরি ক্যান্সার কোষের ঝিল্লিতে যুক্ত হয়ে কাজ করে। মাইক্রোস্কোপিক ছবিতে ক্যান্সার কোষের নিউক্লিয়াস নীল, মেলিটিন সবুজ এবং EGFR রিসেপ্টর লাল রঙে প্রদর্শিত হয়েছে। এতে স্পষ্ট বোঝা গেছে মেলিটিন ক্যান্সার কোষে সুনির্দিষ্টভাবে প্রবেশ করছে।
গবেষক দল জানিয়েছেন, এই ফলাফল ভবিষ্যতের ক্যান্সার চিকিৎসায় নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে। তবে তারা সতর্ক করে বলেছেন, এখনো এটি ল্যাবরেটরি ও প্রাণী পরীক্ষার পর্যায়ে সীমাবদ্ধ। মানবদেহে প্রয়োগের আগে বহু ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করা প্রয়োজন।

More Stories
আলকুশি
শিশুর বিকাশে সংগীত শিক্ষা অপরিহার্য: গবেষণা জানাচ্ছে নতুন দিগন্তের কথা
চাঁদের পূর্ণগ্রহণ আজ : আকাশজুড়ে ‘রক্তচাঁদ’-এর বিরল দৃশ্য