October 5, 2025

গ্রামে এবং আশেপাশের এলাকায় নেই বৌদ্ধদের বসবাস, তবুও ৩৭বছর ধরে মহা ধুমধাম করে বৌদ্ধ মন্দিরে পালিত হচ্ছে বুদ্ধজয়ন্তী

সোমালিয়া সংবাদ, পুরশুড়া: রবিবার পুরশুড়ার দেউলপাড়ায় বৌদ্ধ মন্দিরে বুদ্ধজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ পুজোপাঠের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে গ্রামের মানুষের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই এই মন্দিরে উপস্থিত ছিলেন। হাজির হয়েছিলেন পুড়শুড়া থানার ওসি আশরাফ আলী মোল্লা। উল্লেখ্য, হুগলি জেলায় এটিই একমাত্র বৌদ্ধ মন্দির। ১৯৮৫ সালে স্থানীয় সমাজসেবী তারকনাথ বাইরি এই মন্দিরটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন। উদ্বোধন করেছিলেন প্রখ্যাত বৌদ্ধ সন্ন্যাসী দালাই লামা। মন্দিরের ভিতরে রয়েছে স্থাপত্যশিল্পের সুন্দর কারুকার্য। তৈলচিত্রের ব্যবহারও সকলকে মুগ্ধ করে। আর মন্দিরের বাইরে রয়েছে একটি সুন্দর বাগান। দামোদর নদের তীরে অবস্থিত এই মন্দির দর্শনের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ ছুটে আসেন। বৌদ্ধপূর্ণিমার দিন এখানে অসংখ্য মানুষের ভিড় জমে। বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এখানে উপস্থিত থেকে মন্দিরের সৌন্দর্য উপভোগ করেন।

মন্দিরটি ইতিমধ্যেই স্থানীয় সাহিত্যিকদের গল্প-‌প্রবন্ধে স্থান করে নিয়েছে। এখানে কয়েকবার সিনেমার শুটিংও হয়েছে। গ্রামবাসীরা জানান, মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা বাইরিরা বর্তমানে কলকাতায় থাকেন। তাই রক্ষণাবেক্ষণের অভাব দেখা দিয়েছে। আগেকার সেই জৌলুস এখন আর নেই। দেখাশোনার জন্য একজন কেয়ারটেকার থাকলেও তা যথেষ্ট নয়। ফলে মন্দিরের দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা অনন্ত দাস, রুমা সামন্ত প্রমুখদের বক্তব্য, এই মন্দির এলাকার মানুষের কাছে একটা গর্বের বিষয়। এর একটা ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই মন্দির সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। উল্লেখ্য, পুরশুড়ার এই দেউলপাড়া গ্রামে প্রায় ৫০০ পরিবারের বসবাস। এছাড়াও সারা পুড়শুড়া ব্লকে প্রায় এক লক্ষ আশি হাজার মানুষ বসবাস করেন। তাঁদের মধ্যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। তবুও ৩৭ বছর ধরে এই মন্দিরটি সম্প্রীতির নিদর্শন হিসাবে ভ্রমণপিপাসু মানুষদের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Loading