October 5, 2025

পদ্ম ফুল ফুটিয়েই আনন্দ বাবলুর

সোমালিয়া সংবাদ, আরামবাগ: বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন শখ। নিজস্ব পেশার বাইরেও মনের আনন্দে অনেকে অনেক রকম কাজ করে থাকেন। তেমনই একজন হলেন আরামবাগের কেশবপুর গ্রামের বাবলু মালিক। তিনি গ্রামেতেই শখ করে পদ্মফুলের চাষ করেছেন। গ্রামেরই একটি পুকুরে গত চার বছর ধরে পদ্মফুল ফোটাচ্ছেন। তবে বিক্রির জন্য নয়, যখন যাঁর প্রয়োজন হয় তিনি  ওই ফুল তুলে নিয়ে যান। কেউ কেউ আবার ভাত খাওয়ার জন্য পাতাও নিয়ে যান। এর জন্য কোন টাকা-পয়সা দিতে হয় না। বাবলু পেশায় প্রতিমা শিল্পী। সারা বছর ধরে তিনি দুর্গা, কালী, সরস্বতী সহ সবরকম প্রতিমা তৈরি করেন। এছাড়াও পুকুরে মাছ চাষ করেন। সেখান থেকে তাঁর যা উপার্জন হয় তাতেই সংসার চলে। বাড়িতে বাবা-মা, স্ত্রী ওর দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে। বাবলু জানালেন, বছর চারেক আগে পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহি থানার সুন্দরপুরে প্রতিমা তৈরির কাজে গিয়েছিলেন। সেখানেই পুকুরে পদ্ম ফুলের চাষ দেখেছিলেন। সেখান থেকেই পদ্ম গাছের গোড়া নিয়ে এসে ওই জলাতে লাগিয়েছিলেন। তারপর নিয়মিত পরিচর্যা করে এবং ওষুধ দিয়ে পদ্মফুল ফুটিয়ে চলেছেন। এর জন্য সময়ের পাশাপাশি আর্থিক খরচও বেশকিছু হয়। বাবলুর কথায়, শরৎকালে যখন পদ্ম ফুলগুলি ফুটতে শুরু করে তখন আমার মন ভরে যায়। গ্রামের মানুষের যখন যার প্রয়োজন হয় ওই ফুল তুলে নিয়ে পুজোয় ব্যবহার করেন। স্থানীয় কালীমন্দিরেও আমি পদ্মফুল দিয়ে আসি। এছাড়াও কেউ কেউ ভাত খাওয়ার জন্য পদ্ম পাতাও নিয়ে যান। প্রতি মরসুমে আট থেকে দশ হাজার পদ্মফুল হয়। প্রায় তিন মাস ধরে এই পদ্মফুল ফোটে। তিনি আরও বলেন, অর্থের জন্য আমি এই ফুল চাষ করিনি। আমার ভাল লাগে তাই করি। সন্তানের মত করে ভালোবেসে ওদেরকে পরিচর্যা করি। তাই যখন ফুল ফোটে তখন খুশিতে মন ভরে যায়। তবে বাবলু জানালেন, পদ্ম গাছের গোড়ায় পদ্ম গোখরো সাপ থাকে। তাই খুব সাবধানে সব কাজ করতে হয়। যদিও তিনি কোনদিন এখনও ওই সাপের মুখোমুখি হননি। স্থানীয় বাসিন্দা প্রণব কুমার ঘোষ বলেন, যখন আমাদের ফুল দরকার হয় তখন বাবলুদাকে বলে ফুল তুলে নিয়ে যাই। উনি কোনরকম আপত্তি করেন না। সব সময়ই সকলকে অনুমতি দিয়ে দেন। আর এক বাসিন্দা তাপসী মালিক বলেন, কালীপুজো, দশহর, বিশ্বকর্মা পুজোর সবেতেই পদ্মফুলের প্রয়োজন হয়। তবে সবচেয়ে বেশি পদ্মফুল লাগে দুর্গাপুজোর সময়। তাই এখানে পদ্মফুলের চাষ হওয়ায় গ্রামের মানুষের খুব উপকার হয়েছে। অন্য জায়গায় কিনতে গেলে ১৫-২০ টাকা করে লাগতো। কিন্তু এখানে বিনা পয়সায় পদ্মফুল পাওয়া যায়। তাই দূর দূরান্ত থেকেও অনেকে এখান থেকে পদ্মফুল নেওয়ার জন্য আসেন।

Loading