সোমালিয়া সংবাদ, আরামবাগ: আরামবাগের হাটবসন্তপুরের নন্দীবাড়ির দুর্গাপুজোর ঐতিহ্য ৩ কেজি ওজনের বিশাল আকার রাজশঙ্খ। ওই শাঁখ বাজিয়েই মহালয়ার দিন পুজোপাঠের সূচনা করা হয়। পুজো শুরুর সূচনাকাল থেকেই এই রীতি চলে আসছে। নন্দীবাড়ির পরিবারের রীতি অনুযায়ী বাড়ির বড়বউ প্রথমে ওই তিন কেজি ওজনের শাঁখ বাজিয়ে পুজোর সূচনা করেন। তারপর দশমী পর্যন্ত বাড়ির অন্যান্য বউ ও পরিবারের সদস্যরা পালা করে করে শাঁখ বাজান। পরিবারের সদস্যরা জানালেন, আগে পাড়ার লোকেদের নিমন্ত্রণ করার জন্য জমিদার বাড়ি থেকে এই শাঁখ বাজিয়ে নিমন্ত্রণ বার্তা পাঠানো হত। শাঁখের শব্দ শুনে পাড়ার লোকেরা হাজির হতেন। যদিও নিমন্ত্রণের রীতি কয়েক দশক আগেই শেষ হয়ে গেছে। এই পরিবারের শাঁখ ছাড়া ঝাড়লন্ঠনসহ রূপো ও পিতলের তৈরি অধিকাংশ পুজোর সামগ্রী চুরি হয়ে গিয়েছে। কেবল শাঁখ ও দু’একটি জিনিস এখনও টিকে রয়েছে। যদিও একমাত্র শাঁখটিই ব্যবহৃত হয়। বাকিগুলি তেমনভাবে ব্যবহৃত হয় না। যেমন এক মন চাল ধরে এমন থালা-গামলা এখনও রয়েছে। কিন্তু পাড়াপ্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই বিশাল আকার থালা-গামলার ব্যবহারের প্রয়োজন ফুরিয়েছে। একদিকে আর্থিক সমস্যা অন্যদিকে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এই পরিবারের পুজোকে গ্রাস করেছে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে বর্ধমানের থেকে উঠে এসে আরামবাগে জমিদারির পত্তন করেছিলেন এই বংশের আশুতোষ নন্দী। তিনি প্রথমে নারায়ণের পুজো শুরু করেন। কিন্তু তাতে জমিদার বাড়ি শ্রীবৃদ্ধি না হওয়ায় হর-পার্বতীর পুজো শুরু করেন। তাই এখানে মা দুর্গার দশভুজা রূপ ও অসুর দেখা যায় না। হর ও পার্বতীরূপে শিব ও দুর্গা এবং তার সঙ্গে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের পুজোপাঠ হয়। পরিবারের সদস্য বাসন্তী নন্দী জানালেন, আগে একচালায় পুজো হতো। কিন্তু এখন বাড়িতে প্রতিমা আনা এবং বিসর্জনের সুবিধার জন্য তিন চালাতে প্রতিমা তৈরি হয়। প্রাচীন এই পুজোর প্রথম কয়েকশো বছরের ইতিহাস নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কেবল ২৩১ বছরের তথ্য নন্দীবাড়িতে সংরক্ষিত রয়েছে।
More Stories
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির গোঘাট এক নম্বর আঞ্চলিক কমিটির তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
গোঘাটে দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ ‘রাবণ কাটা’ রথের মেলা
রামকৃষ্ণ সেতু ২৪x৫ ঘন্টা খোলা রাখার আবেদন মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া পর্যন্ত — দুর্গাপুজোয় নির্বিঘ্ন যাতায়াতের স্বার্থে বিধায়ক মধুসূদন বাগের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি