October 5, 2025

গোঘাটে যেন অকাল বন্যা, ক্যানেলের ছাড়া জলে ডুবে গেল বিঘের পর বিঘে আলুজমি

সোমালিয়া সংবাদ, গোঘাট: যেন অকাল বন্যা। কংসাবতী ক্যানেলের ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত জলে গোঘাটে বিঘের পর বিঘে আলুজমি ডুবে গেল জলে। এর ফলে ওই সমস্ত জমির সমস্ত আলু একেবারে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর এই ঘটনায় মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। জানা গেছে, হঠাৎই কংসাবতী ক্যানেলের মধ্য দিয়ে অতিরিক্ত জল চলে আসে। যার ফলে ক্যানেলের দু’পাশ উপচে আশেপাশের জমি প্লাবিত হয়। এই সময় গোঘাট,- নম্বর ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত কুমুড়সা, সাওড়া ও বালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মাঠের পর মাঠ জমিতে আলু চাষ রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ক‍্যানেলে আসা ওই অত্যধিক জল আলু জমিতে ঢুকে যায়। রবিবার রাত থেকে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে শুরু করে।  খবর পেয়ে রাত থেকেই চাষিরা মাঠে ছুটে গিয়ে আলু বাঁচানোর চেষ্টা করেন। জমির আল কেটে জল বের করেও কোন লাভ হয়নি। তাই সোমবার সকাল থেকে জমিতে পাম্প বসিয়ে জল বের করার কাজ শুরু হয়। কিন্তু তাতেও কতটা লাভ হবে তা চাষিরা নিজেরাই বুঝতে পারছেন না। এ বিষয়ে স্থানীয় চাষি সত্যচরণ মালিক, বিশ্বজিৎ বৈরাগী, নিমাই দোলুই প্রমুখরা জানালেন, যেভাবে জলে ডুবেছে তাতে আর আলু গাছ বাঁচানো সম্ভব নয়। জমিতে থাকা সমস্ত আলুতেই পচন ধরবে। তাঁরা জানান, বেশিরভাগ চাষিই সমবায় ব্যাংক থেকে অথবা মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছেন। তাই এভাবে আলু নষ্ট হয়ে গেলে তাঁরা কিভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা আরও জানান, বিঘে প্রতি আলু চাষে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন সেই টাকা তোলা তাঁদের কাছে দুঃস্বপ্নের মত মনে হচ্ছে। তাঁরা ক্ষোভের সঙ্গে আরও বলেন, ধান চাষের শুরুতে যখন জলের প্রয়োজন হয় তখন বারবার অনুরোধ করেও ক্যানেলগুলি থেকে জল পাওয়া যায় না। আর এখন আলু চাষে খুবই অল্প জল লাগে। তা সত্ত্বেও অতিরিক্ত জল ছেড়ে চাষিদেরকে একেবারে পথে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে তাঁরা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। অন‍্যদিকে গোঘাট-১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির  কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ চন্দ্র পাঁজা বলেন, বিষয়টি শুনেছি, হঠাৎ করে ক্যানেলে জল চলে আসায় এই সমস্যা হয়েছে। যাতে একবারে অনেক জল ছাড়া না হয় সে ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আগেই কংসাবতীকে সতর্ক করেছে। তা সত্ত্বেও ক্যানেলের ছাড়া জল প্লাবিত হয়ে জমিতে ঢুকে গেছে। যাতে একসঙ্গে বেশি জল ছাড়া না হয় সেজন্য আমি টেলিফোনে ওদের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি আর বেশি জল ছাড়া হবে না। 

Loading