সোমালিয়া সংবাদ, আরামবাগ: দলছুট দাঁতাল গজরাজকে হাত জোড় করে প্রণাম যুবকের। কিন্তু ভক্তের সেই প্রণাম গ্রহণ করল না গজরাজ। উল্টে সামনে পেয়ে পা দিয়ে পিষে দিল। তারপর সেই পায়ে করেই পিছনের দিকে ছুঁড়ে দিল। এই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মিলন ফটিক নামে ওই যুবক। তাঁর বাড়ি আরামবাগ পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন বাজার এলাকায়। তিনি পেশায় সবজি বিক্রেতা। এছাড়াও এদিন সকালের দিকে আরও এক ব্যক্তিকে সামনে পেয়ে পায়ে করে ছুঁড়ে দেয় হাতিটি। যদিও নরম মাটিতে পড়ায় তাঁর তেমনভাবে আঘাত লাগেনি। পরে বিকেলের দিকে অল্প আহত হন হুলা পার্টির এক সদস্যও। জানা গেছে, শনিবার ভোর রাত থেকে গোঘাট ও আরামবাগের বেশ কিছু এলাকায় দাপিয়ে বেড়ালো দলছুট একটি দাঁতাল হাতি। এই ঘটনায় ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ও বনদপ্তরের আধিকারিকরা হুলা পার্টির সহায়তায় হাতিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের দিকে নিয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ভোরে গোঘাট সীমান্তবর্তী আরামবাগের কালিপুর ও সাজিডাঙ্গার জঙ্গলে এলাকার মানুষ ওই হাতিটিকে ঘোরাফেরা করতে দেখেন। এই ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাই তাকে তাড়া করতে থাকেন। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে দাঁতাল হাতিটি। খবর পেয়ে এলাকায় এসে পৌঁছান রাজ্য ওয়েস্টার্ন সার্কেল সিসিএফ অশোক সিং। এর আগে সকালেই ঘটনাস্থলে হাজির হন আরামবাগ শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা স্থানীয় কাউন্সিলর প্রদীপ সিংহরায়। ছুটে যান আরামবাগ ফরেস্ট রেঞ্জার আশরাফুল ইসলাম, আরামবাগ এসডিও সুভাষিনী ই., এসডিপিও অভিষেক মন্ডল, আইসি বরুণ ঘোষ সহ পুলিশের বিভিন্ন আধিকারিক ও কর্মীরা। তাঁরা উৎসাহী ও উত্তেজিত জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। মাইকিং করে জনগণকে বারবার সচেতন করা হয়। কিন্তু তারপরেও মিলন ফটিক নামে ওই যুবক মাঠের মধ্যে হাতিটিকে দেখতে পেয়ে তার সামনে চলে যান। তারপর তাকে হাতজোড় করে প্রণাম করতে থাকেন। তারপর আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য মাথা নিচু করেন। কিন্তু হাতিটি সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে প্রথমে পায়ে করে পিষে দেয়। তারপর পিছন দিকে ছুঁড়ে দেয়। এই ঘটনায় তিনি গুরুতর জখম হন। স্থানীয় মানুষ ও পুলিশ কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে আরামবাগ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে কলকাতায় রেফার করা হয়। পরে দুপুরের দিকে গড়বেতা, জয়পুর সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে হুলা পার্টি এসে পৌঁছলে তাদের সাহায্যে হাতি দুটিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ রজক, চন্দন মালিক জানান, হাতির পায়ে এবং সাধারণ মানুষের ছোটাছুটিতে এলাকায় আলু ও অন্যান্য ফসলের বেশ ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে আরামবাগ ফরেস্ট রেঞ্জার আশরাফুল ইসলাম বলেন, সম্ভবত হাতিটি পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলের দিক থেকে দলছুট হয়ে আরামবাগ মহকুমার গোঘাট ও আরামবাগে ঢুকেছিল। তাকে নিরাপদে আবার ওই জঙ্গলের দিকেই ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। ওয়েস্টার্ন সার্কেল সিসিএফ অশোক সিং বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। হাতিটি দলছুট হয়ে এখানে চলে এসেছে। তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য হুলা পার্টিকে কাজে লাগানো হয়েছে।

More Stories
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির গোঘাট এক নম্বর আঞ্চলিক কমিটির তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
গোঘাটে দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ ‘রাবণ কাটা’ রথের মেলা
রামকৃষ্ণ সেতু ২৪x৫ ঘন্টা খোলা রাখার আবেদন মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া পর্যন্ত — দুর্গাপুজোয় নির্বিঘ্ন যাতায়াতের স্বার্থে বিধায়ক মধুসূদন বাগের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি