সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: আচ্ছা বলুন তো গণতন্ত্র ভালো? না রাজতন্ত্র ভালো?আমাদের দেশে নাগরিকদের এমনটা মনে হচ্ছে না তো যে আমরা একটু বেশি গণতান্ত্রিক হয়ে উঠেছি।যেকোনো ধরনের মন্তব্য, বক্তব্য, প্রচার, অপপ্রচার, নিজের ইচ্ছামত সমাজে জীবন যাপন করা, চলাফেরা ইত্যাদি সমস্ত কিছুতেই আমরা গণতান্ত্রিক অধিকার বলে দাবি করি। কিন্তু কেন জানি না শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, নিরাপত্তা ইত্যাদির ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক অধিকার বলার কাউকে খুঁজে পাই না। আর এর সাথে ভোট দেওয়া তো অত্যাবশ্যকীয় গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে এ ক্ষেত্রে কোনো নাগরিক শিক্ষিত হোক বা নাই হোক, ভালো খারাপ বোঝার ক্ষমতা থাকুক বা না থাকুক, দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ইত্যাদি আরও অনেক কিছুই না জানা থাকলেও এলাকার কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের কথা শুনে, তাদের থেকে সুবিধা নিয়ে বা না নিয়ে, প্রলুব্ধ হয়ে ভোট দান করে। ভারতবর্ষের বিখ্যাত এক নেতা বলেছিলেন, ভোট দেবার অধিকার সকল নাগরিকের ক্ষেত্রে প্রয়োগ না করা। শুধুমাত্র লিখতে বা পড়তে পারলেই শিক্ষিত হওয়া যায় না। চাই নিজের বিবেক ও জ্ঞান। সমাজের পক্ষে ভয়ংকর হল শিক্ষিত বুদ্ধিমান শয়তানরা। এই ভেকধারী বুদ্ধিমান শয়তানরা সমাজের নিষ্পাপ অশিক্ষিত মানুষদের চালনা করে।আমরা সবাই বলি ভোট দান হল গণতন্ত্রের উৎসব। কিন্তু বর্তমান সময়ে ভোটগ্রহণপর্ব মানেই হিংসা, হানাহানি, রক্তভেজা দেশের মাটি। গণতন্ত্রের উৎসবেই যেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না তাহলে কিসের ভোট দান? আচ্ছা ভাবুন তো এমন যদি হতো—-
সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রচার, দেওয়াল লিখন, পতাকা বাঁধা, মিটিং মিছিল বন্ধ করতে হবে।নির্বাচন কমিশন প্রত্যেক এলাকায় কোন্ কোন্ রাজনৈতিক দল লড়াই করতে চলেছে সে বিষয়ে তথ্য গণমাধ্যম বা এলাকার বিশেষ বিশেষ স্থানে জানিয়ে দেবে। এর ফলে রাজনৈতিক হানাহানি, হিংসা বন্ধ করা সম্ভব হবে।
রাজনৈতিক দলের কোন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা চলবে না। শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের প্রতীকের ঘোষণা হবে ও প্রতীক চিহ্নের ভোট হবে। ফলাফল বের হয়ে যাবার পর শুধুমাত্র জয়ী রাজনৈতিক দল নিজেদের দলে আলোচনা করে উপযুক্ত ব্যক্তির নাম ঘোষণা করবেন। রাজনৈতিক দল থেকে নির্বাচিত উক্ত জনপ্রতিনিধি এলাকায় কাজ না করলে বা ওই রাজনৈতিক দল তার কাজে সন্তুষ্ট না হলে, নতুন জনপ্রতিনিধি নিয়োগ করতে পারবে। রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিটি এলাকায়(অঞ্চল অথবা ওয়ার্ড) একজন করে তাদের প্রতিনিধি রাখবে। নির্বাচন দপ্তরে তা আগে থেকে জানিয়ে রাখতে হবে। প্রতিটি মহুকুমায় শুধুমাত্র একটি করে রাজনৈতিক দলের অফিস থাকবে এবং রাজ্যে বা দেশে একটি হেড অফিস থাকবে। এই অফিস সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে থাকবে।
রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ইস্তেহার শুধুমাত্র গণমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখিত আকারে প্রকাশ করতে পারবে। কোনরকম ছবি বা উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা চলবে না।
বর্তমান সময়ে অনেকেই অনলাইন টাকা-পয়সার লেনদেন করেন। একইভাবে ভোট দানের ক্ষেত্রে এইরকম ব্যবস্থা রাখতে হবে। ব্যাংকের এটিএম কেন্দ্র গুলি ও বিভিন্ন রকমের পেমেন্ট গেটওয়ে গুলি ব্যবহার করা যেতে পারে। যে সমস্ত নাগরিকদের উক্ত ব্যবস্থা নেই তাদের ক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি গিয়ে(বর্তমানে যেভাবে বয়স্ক ব্যক্তিদের ভোটগ্রহণ চলছে) এবং ভিডিও রেকর্ডিং করে ভোট গ্রহণ করলে অনেকটাই নিরাপদে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্ভব হবে। আধার কার্ড অথবা এটিএম কার্ড দিয়ে যে ভাবে অনলাইনে টাকা তোলা হয় ঠিক একইভাবে কেউ চাইলে অনলাইনে ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা রাখা উচিত। এর ফলে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকেই নাগরিকরা ভোট দানে সক্ষম হবেন। তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা সময় বেশি লাগতে পারে। তাই কিছু মাস আগে থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু করা দেওয়া যেতে পারে। এর ফলে সরকারের নির্বাচন করতে যে বিশাল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হয় তা অনেকটাই কম হবে।
নাগরিকরা যাতে জনপ্রতিনিধিদের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ করতে পারে সে বিষয়ে অনলাইন ব্যবস্থায় লিপিবদ্ধ করতে হবে। জনসমক্ষে সেই অভিযোগ পেশ হবে। দেশের প্রধানমন্ত্রী অথবা স্বরাষ্ট্র দপ্তর এই অভিযোগ দেখে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
মানুষকে শুধু সুবিধা পাইয়ে দেওয়া এবং তার কর্ম ক্ষমতা নষ্ট করে দেবার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে। পুলিশ প্রশাসনকে মনিটরিং করার জন্য বিশেষ কমিশন বা নোডাল সেল থাকবে, বিরোধী রাজনৈতিক দল, হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও আইনজীবী, সরকারপক্ষ এবং সরকারপক্ষের রাজনৈতিক দল, সংবাদমাধ্যম এবং গণমাধ্যম ইত্যাদি সকলে উক্ত কমিশন বা নোডাল সেলের সাথে যুক্ত থাকবেন ও প্রতিনিধিত্ব করবেন। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা আরও কার্যকরী ও জোরালো হবে।
সময়ের সাথে সাথে সংবিধানের সংশোধন হওয়া প্রয়োজন।
আবার হয়তো এমন হল যে জনগণ বুঝতে পারছে এক বছরের মধ্যেই তাদের মনোনীত সরকার সঠিকভাবে কাজ করছে না তাহলে জনগণ বিশেষ ভোটের মাধ্যমে তা রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতিকে জানাতে পারবেন। রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি আবার নতুন করে সরকার গঠনের ব্যবস্থা করবেন বা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।
এমন যদি হতো দেশে অনেকটাই শান্তি থাকতো। কিন্তু তা কি আদৌ সম্ভব! বা সম্ভব হলে কবে?
More Stories
নীতিশ সরকারের নতুন দান — ২৫ লক্ষ মহিলার ব্যাঙ্কে পৌঁছল ১০ হাজার টাকা
বিজয়া দশমী: অধর্মের পরাজয় ও ধর্মের জয় উদযাপন
মহা অষ্টমী : দেবী আরাধনার সর্বোচ্চ শিখর