October 5, 2025

তৃণমূল কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে

সোমালিয়া সংবাদ, খানাকুল: তৃণমূল কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই তৃণমূল কর্মী এখন আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আক্রান্ত ওই তৃণমূল কর্মীর নাম স্বপন মাঝি। তিনি  খানাকুলের কিশোরপুর-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বামুনখানা গ্রামে। তিনি ওই পঞ্চায়েতের চার নম্বর সংসদের তৃণমূলের নির্বাচিত সদস্য। দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। এবারের বিধানসভা নির্বাচনেও দলের হয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আর তারপর থেকেই তাঁকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। স্বপন মাঝি জানান, বৃহস্পতিবার রাত ন’টা নাগাদ তিনি বাড়ির কাছে একটি স্কুলের সামনে বসেছিলেন। তখন বাইকে চড়ে বিজেপি আশ্রিত কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁর কাছে হাজির হয়। তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। তারপর জোর করে বাইকে তুলে নেয়। কিছুদূর নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর হাতে দড়ি বেঁধে রাস্তার ওপর টানতে টানতে নিয়ে যায়। তিনি যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন। কিন্তু তারা কোন কথা শোনেনি। এরপর তাঁকে খানাকুল সংলগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুরের দিকে নিয়ে চলে যায়। সেখানে তাঁকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। লাঠি ও রড দিয়ে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করা হয়। দাঁত ভেঙে দেওয়া হয়। পায়ে বুট পড়ে বুকে লাথি মারা হয়। পায়ের আঙ্গুল থেতলে দেয়া হয়। সারারাত ধরে ওরা নৃশংস ভাবে অত্যাচার চালায়। ভোরের দিকে তাদের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করলে তারা কিছুটা দূরে তাঁকে ফেলে দিয়ে পালায়। এদিকে স্বপন বাবুকে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পেতেই রাতেই তৃণমূল নেতৃত্ব খানাকুল থানায় বিষয়টি জানান। এরপর ভোরের দিকে খানাকুল থানার পুলিশ পশ্চিম মেদিনীপুর সীমান্তের বালিডাঙ্গা এলাকা থেকে স্বপন বাবুকে উদ্ধার করে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান খানাকুলের তৃণমূল প্রার্থী মুন্সি নজবুল করিমসহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তাঁরা স্বপনবাবুর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর চোট রয়েছে।

মোট ১৬টি দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কয়েকটি দাঁত ভেঙে উপড়ে পড়ে গেছে। ডান পায়ের আঙুলগুলি থেঁতো করে দেওয়া হয়েছে। গালেতেও গুরুতর আঘাত লেগেছে। এ বিষয়ে তৃণমূল প্রার্থী মুন্সি নজবুল করিম বলেন, বিজেপি কত হিংস্র আচরণ করতে পারে এই ঘটনা তার প্রমান। ওরা যেভাবে স্বপনবাবুকে মারধর করেছে তার জন্য নিন্দা জানানোর কোন ভাষা নেই। ওই এলাকাটা বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীতে ভরে গেছে। ওরা খানাকুলে শুধু তৃণমূল কর্মীদের ওপরই  আক্রমণ করছে না, এলাকার মহিলাদের সঙ্গেও খুব নোংরা ব্যবহার করছে। অপরাধ করে ওরা পশ্চিম মেদিনীপুরে গিয়ে গা ঢাকা দিচ্ছে। বারবার পুলিশের কাছে থানায় এফআইআর করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও ওদের সন্ত্রাস কমছে না। এলাকার মানুষ ওদের এই অসামাজিক কাজকর্মের হাত থেকে মুক্তি পেতে চাইছে। যদিও তৃণমূলের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ। তিনি বলেন, এটা ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ঘটেছে। সেই দায় বিজেপির উপর মিথ্যাভাবে চাপানো হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কেউ যুক্ত নয়। 

Loading