October 5, 2025

ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে লক হবে ফোন: নতুন নিয়মে কী বার্তা দিচ্ছে RBI?

সোমালিয়া ওয়েব নিউজঃভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI) সম্প্রতি এমন এক প্রস্তাব বিবেচনা করছে, যাতে ক্রেডিট বা ইএমআই-এ কেনা মোবাইল ফোনের ঋণগ্রহীতা বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ফোন রিমোটলি লক করা যাবে। এই খবরে ভোক্তা সমাজে যেমন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তেমনি ব্যাঙ্ক ও ক্ষুদ্র ঋণদাতারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।

কেন এই পদক্ষেপ?

ভারতে গত কয়েক বছরে ক্ষুদ্রঋণ (small-ticket loans) এর ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে। বিশেষ করে স্মার্টফোন ক্রেতাদের বড় অংশ এখন কিস্তিতে ফোন কিনছেন। কিন্তু ঋণখেলাপির হারও বাড়ছে। ব্যাঙ্ক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর দাবি, ফোন লক করার ক্ষমতা থাকলে গ্রাহকরা ঋণ পরিশোধে আরও দায়িত্বশীল হবেন।

নিয়ম কী বলছে?

  • ফোন লক করার আগে গ্রাহকের সুস্পষ্ট সম্মতি নিতে হবে।
  • লক হওয়া ফোনের ব্যক্তিগত তথ্য যেমন—ছবি, কনট্যাক্ট, মেসেজ—অ্যাকসেস করা যাবে না।
  • এই নিয়ম হবে RBI-এর Fair Practices Code-এর অংশ, যাতে ঋণদাতার স্বচ্ছতা ও ভোক্তার অধিকার দুটোই বজায় থাকে।

উদ্বেগ কোথায়?

ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলির আশঙ্কা, ফোন লক করার এই ক্ষমতা অনেক সময় অতিরিক্ত চাপ তৈরি করতে পারে। ফোন আজ শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়—কাজ, ব্যবসা, শিক্ষা, এমনকি চিকিৎসার ক্ষেত্রেও অপরিহার্য। ফলে ফোন লক হয়ে গেলে ঋণগ্রহীতার জীবনে গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।
তাছাড়া, গ্রামীণ ও নিম্নআয়ের মানুষের উপর এই নিয়মের প্রভাব পড়বে বেশি, কারণ তারাই কিস্তিতে ফোন কেনার প্রবণতায় শীর্ষে।

কর্পোরেট ও বাজারে প্রভাব

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নীতি চালু হলে ব্যাঙ্ক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর ঋণ আদায়ে নিরাপত্তা বাড়বে। তবে একই সঙ্গে এটি স্মার্টফোন বাজারে ক্রেতাদের আচরণও বদলে দিতে পারে। অনেকেই হয়তো কিস্তির পরিবর্তে এককালীন দাম মিটিয়ে ফোন কিনতে চাইবেন।

RBI-এর প্রস্তাব কার্যকর হলে ভারতের আর্থিক খাতে এক নতুন অধ্যায় শুরু হবে। তবে এটি ভোক্তার সুরক্ষা বনাম ঋণদাতার স্বার্থ– এই দুইয়ের মধ্যে সূক্ষ্ম ভারসাম্য রক্ষার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে। প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—ঋণখেলাপি কমাতে ফোন লক করা কি যথেষ্ট ন্যায্য সমাধান, নাকি সাধারণ মানুষকে নতুন ধরনের আর্থিক অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে?

Loading