সোমালিয়া ওয়েব নিউজ; এক সময় গোঘাটের মাঠে-ময়দানে কৃষক আন্দোলনের প্রতীক ছিলেন দিবাকর চোংদার। কামারপুকুর কলেজ থেকে স্নাতকোত্তীর্ণ হয়েছিলেন। কেমন আছেন উনি? ওনার খবর নিতে আমরা ওনার বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলাম। লাল পতাকা হাতে, কৃষকের দাবি নিয়ে তিনি দাঁড়াতেন সংগ্রামের অগ্রভাগে। ছিলেন সিপিএমের গোঘাট জোনাল কমিটির সেক্রেটারি, দু’নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জেলা কমিটির সদস্য, আবার গোঘাট থানা কৃষক সমিতির সভাপতি ছিলেন, ওনার নেতৃত্বের অবদান ছিল অসামান্য। সেই দিনের উত্তাল সময়ে দিবাকর চোংদার ছিলেন এক চেনা মুখ, যাঁকে দেখে মানুষ সাহস পেত। কংগ্রেস আমলে যখন কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ ছিল তখন মিসা আইনে (MISA 1971 ) দিবাকর বাবু জেলও খেটেছিলেন। কিন্তু আজ—সেই মানুষটির শরীর ভেঙে পড়েছে, স্মৃতির ভাণ্ডার ফিকে হয়ে এসেছে, হাঁটতে হয় ওয়াকার ভর করে। যিনি এক সময় স্লোগানে, বক্তৃতায়, সংগঠনে প্রাণ দিতেন, তিনি আজ আর স্পষ্ট করে কথাও বলতে পারেন না। নিজের কাজটুকুও আর নিজে করতে পারেন না। তাঁর তিলাড়ী গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সময়ের নিষ্ঠুরতা কেমন করে এক লড়াকু নেতাকে নিঃসঙ্গতার কোলে ঠেলে দিয়েছে। খুব অল্প কিছু নিকটজন ছাড়া আর কেউ আর খোঁজখবর নেন না। যিনি এক সময় পার্টির প্রাণ ছিলেন, আজ সেই পার্টির সঙ্গে তাঁর দূরত্বও বেড়ে গেছে। এই চিত্র কেবল দিবাকর চোঙংদারের নয়, এ ছবি আসলে এক প্রজন্মের—যাঁরা নিজেদের জীবন রাজনীতি ও মানুষের জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু বার্ধক্যে এসে পেয়েছেন অবহেলা, নিঃসঙ্গতা। সমাজ, দল, সহযোদ্ধা—সবার কাছে এই প্রশ্ন রয়ে যায়: আমরা কি যথাযথ সম্মান দিতে পেরেছি তাঁদের, যাঁরা একদিন আমাদের অধিকার রক্ষার জন্য লড়েছিলেন, সময়ের স্রোতে অনেক কিছুই বদলে যায়। কিন্তু এক লড়াকু গুনি নেতার প্রতি কৃতজ্ঞতা বা দায়বদ্ধতা কি বদলে যাওয়া উচিত? দিবাকর চোংদারের আজকের নিঃসঙ্গতা যেন আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয়—সংগ্রামী মানুষদের অবদান ভুলে গেলে ইতিহাসও একদিন আমাদের ভুলে যাবে।
More Stories
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির গোঘাট এক নম্বর আঞ্চলিক কমিটির তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
গোঘাটে দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ ‘রাবণ কাটা’ রথের মেলা
রামকৃষ্ণ সেতু ২৪x৫ ঘন্টা খোলা রাখার আবেদন মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া পর্যন্ত — দুর্গাপুজোয় নির্বিঘ্ন যাতায়াতের স্বার্থে বিধায়ক মধুসূদন বাগের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি