🌿 আমলকী বৃক্ষের মাহাত্ম্য ও কার্তিক মাসে আমলকী নিবেদন

সোমালিয়া ওয়েব নিউজ:

বৈদিক শাস্ত্রে বর্ণিত বৃক্ষদের মধ্যে আমলকী বৃক্ষের স্থান অত্যন্ত মহিমান্বিত। পুরাণ অনুসারে, সৃষ্টির প্রারম্ভে ব্রহ্মা যখন পরমেশ্বরকে দর্শন করে আনন্দে আপ্লুত হন, তাঁর অশ্রুবিন্দু থেকেই জন্ম নেয় আমলকী বৃক্ষ। আবার অন্য কল্পে বলা হয়েছে, দেবী লক্ষ্মী ও পার্বতী যখন হরিকথা শ্রবণকালে ভক্তিপূর্ণ অশ্রু বিসর্জন করেন, সেই অশ্রু থেকেই আমলকী বৃক্ষের উদ্ভব ঘটে। সেই কারণেই এই বৃক্ষকে ‘আদিবৃক্ষ’ বা ‘দেবী বৃক্ষ’ হিসেবেও মানা হয়।

কার্তিক মাসের শুক্লা চতুর্দশী দিনটি এই বৃক্ষের জন্মতিথি হিসেবে পালন করা হয়। ভগবান স্বয়ং এই বৃক্ষকে তাঁর প্রিয় বলে ঘোষণা করেছেন। শাস্ত্রমতে, এই বিশেষ তিথিতে আমলকী বৃক্ষের পূজা, প্রদক্ষিণ, অথবা আমলকী ফল নিবেদন করলে সহস্রগুণ শুভফল প্রাপ্তি ঘটে।

এই বছর সেই পবিত্র তিথি পড়ছে **২৯ নভেম্বর, রবিবার**। ধর্মপ্রাণ মানুষ এই দিনে আমলকী ফল ভগবানকে নিবেদন করে, বৃক্ষের প্রদক্ষিণ করে ও তার নিচে শাস্ত্র পাঠে অংশ নেন। বিশ্বাস করা হয়, এই সকল অনুষঙ্গ ভগবানের বিশেষ কৃপালাভের পথ উন্মুক্ত করে।

কার্তিক মাস, যা দামোদর মাস নামেও পরিচিত, ভক্তিমূলক সেবার জন্য অন্যতম শুভকাল। এই মাসে যেকোনো সেবা বা উপাসনা সহস্রগুণ বেশি ফলপ্রদ হয় বলে শাস্ত্রে উল্লিখিত। ভক্তরা এই সময়ে দীপদান, তুলসীকাষ্ঠ প্রদীপ প্রজ্বলন, ও আমলকী নিবেদনের মতো বিভিন্ন সেবার মাধ্যমে ভগবানের আরাধনায় নিমগ্ন থাকেন।

ভক্তসমাজের বিশ্বাস, পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ করুণাসাগর। তিনি ভক্তদের সামান্য প্রয়াসকেও অসীম কৃপায় পূর্ণ করেন। তাই ভক্তিমূলক শ্রদ্ধা ও নিষ্ঠা সহকারে আমলকী নিবেদন করলে জীবনে কল্যাণ, সুস্বাস্থ্য ও ভক্তির উন্নতি ঘটে।

এই বিশেষ তিথিতে সম্পাদনীয় কার্যক্রম হিসেবে উল্লেখযোগ্য —

১️⃣ আমলকী বৃক্ষের প্রদক্ষিণ

২️⃣ বৃক্ষতলে শাস্ত্র পাঠ বা ভক্তিগীতি

৩️⃣ আমলকী ফল ভগবানকে নিবেদন ও প্রসাদরূপে গ্রহণ

আধ্যাত্মিকমহলে বলা হয়, এইসব আচার শুধু ধর্মীয় অনুশাসন নয়, প্রকৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রকাশও বটে। বৃক্ষরোপণ, পূজা ও সংরক্ষণ— সব মিলিয়ে এটি ভক্তি ও পরিবেশ সচেতনতার এক অপূর্ব সমন্বয়।