সোমালিয়া ওয়েব নিউজ: অক্ষয় তৃতীয়া মানে বাঙালীর ঘরে ঘরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও সিদ্ধিদাতা গণেশের পুজোপাঠ। এই বিশেষ দিনে কুবেরের তপস্যায় খুশি হয়ে মহাদেব তাকে ধন ঐশ্বর্য দান করেছিলেন। যা কুবেরের লক্ষীলাভ বলেও লোকমুখে প্রচলিত। যার কারনে কেউ কেউ আবার এই দিন বৈভব- লক্ষীদেবীর পুজোও করে থাকেন। সময়ে বিবর্তনের ফলে এই বিশেষ দিনে বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরে দেখা যায় মানুষের ভিড়। বহু দোকানে বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে লক্ষী-গণেশ পুজো করে হাল খাতাও করা হয়। উল্লেখ্য, অক্ষয় তৃতীয়া হল চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লাতৃতীয়া অর্থাৎ শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি। হিন্দু ও জৈন ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ তিথি। এই শুভদিনে জন্ম নিয়েছিলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম। বেদব্যাস ও গণেশ এই দিনে মহাভারত রচনা আরম্ভ করেন। এদিনই সত্য যুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়। এদিনই রাজা ভগীরথ গঙ্গাদেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন। এদিনই কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহাদেব তাঁকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেন। এদিনই কুবেরের লক্ষ্মীলাভ হয়েছিল বলে এদিন বৈভব-লক্ষ্মীর পুজো করা হয়। এদিন পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষে রথ নির্মাণ শুরু হয়। অক্ষয় শব্দের অর্থ হল যা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈদিক বিশ্বাসানুসারে, এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। কেদার-বদ্রী-গঙ্গোত্রী-যমুনোত্রীর যে মন্দির ছয়মাস বন্ধ থাকে এইদিনেই তার দ্বার উদ্ঘাটন হয়। দ্বার খুললেই দেখা যায় সেই অক্ষয়দীপ যা ছয়মাস আগে জ্বালিয়ে আসা হয়েছিল। আধুনিককালে এই তিথিতে সোনার বা রূপার গয়না কেনা হয়। মনে করা হয়, এই শুভ তিথিতে রত্ন বা জিনিসপত্র কিনলে গৃহে শুভ যোগ হবে। সুখ-শান্তি ও সম্পদ বৃদ্ধি হবে। এই আশাতেই এদিন মানুষ কিছু না কিছু কিনে থাকেন। সবমিলিয়ে এই শুভ দিনে বাঙালী হিন্দুর ঘরে ঘরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো হয়।
More Stories
১৩ হাজার ডলারের বিনিময়ে কেনা এক টুকরো বিরানভূমি, যা পরিণত হলো প্রকৃতির স্বর্গে
কেন ব্যবহার করা হয় “ঘট” হিন্দু পূজায়?
মা দুর্গার মুখে উর্ণনাভ: মহামায়ার চিহ্ন