October 5, 2025

মায়ের জন্য মন খারাপ, মাকে খুঁজতে ব্যস্ত রাস্তায় ছোটাছুটি সাড়ে তিন বছরের শিশুর, উদ্ধার করে বাঁচালেন সিভিক ভলেন্টিয়াররা

সোমালিয়া সংবাদ, আরামবাগ: ব্যস্ত রাজ্য সড়কের উপর ছুটাছুটি করতে থাকা সাড়ে তিন বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করে তার মায়ের হাতে ফিরিয়ে দিলেন তিন সিভিক ভলেন্টিয়ার। কোন বিপদ ঘটার আগেই ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মা অনিতা সিং। ঘটনাটি ঘটেছে আরামবাগের মায়াপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আরামবাগ-চাঁপাডাঙ্গা দু’নম্বর রাজ্য সড়কের ওপর। অনিতাদেবীদের বাড়ি স্থানীয় পানপিট এলাকায়। তাঁর স্বামী বিকাশ সিং রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি বাড়িতে ছিলেন না, কাজে গিয়েছিলেন। শ্বশুরমশায়ের কাছে সাড়ে তিন বছরের শিশু অবিনাশকে রেখে দোকানে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন মা অনিতাদেবী। বাড়ি ফিরে দেখেন ছেলে বাড়িতে নেই। শ্বশুরমশাই তার আগে খোঁজাখুঁজি করেছেন। কিন্তু পাননি। মা তখন এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। অন্যদিকে ছোট্ট অবিনাশ তখন পৌঁছে গিয়েছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মায়াপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। সেখানে তখন দ্রুত গতিতে বিভিন্ন যানবাহন ছুটছে। যেকোন মুহূর্তে শিশুটি দুর্ঘটনায় পড়তে পারত। ওখানে তখন ট্রাফিকের দায়িত্বে ছিলেন তিন সিভিক ভলেন্টিয়ার। ছেলেটিকে কাঁদতে কাঁদতে ছুটতে দেখে তাঁরা তাকে উদ্ধার করে নিজেদের কাছে রাখেন। তারপর তাকে  কিছু কেক বিস্কুট খেতে দেন। ছেলেটিকে তার বাবা-মায়ের নাম ও ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলেও সে বলতে পারেনি। সিভিক ভলেন্টিয়াররা তখন বিভিন্ন জনের মাধ্যমে খোঁজখবর শুরু করেন। কিছুক্ষণ পরে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে করতে সেখানে হাজির হয়ে ছেলেকে দেখতে পান মা অনিতা দেবী। এরপর মায়ের পরিচয় নিশ্চিত হতেই সিভিক ভলেন্টিয়াররা তাঁর হাতে তুলে দেন ছেলেকে। ছেলেকে ফিরে পেয়ে বুকে আঁকড়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা। তিনি বলেন, সিভিক ভলেন্টিয়াররা আজ যেভাবে আমার ছেলেকে উদ্ধার করে বাঁচিয়েছেন আমি ওনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। যেকোন মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। অন্যদিকে ছোট্ট অবিনাশ জানায়,   অনেকক্ষণ হয়ে গেল মাকে দেখতে পাইনি। তাই মাকে খুঁজতে বেরিয়েছিলাম। সিভিক ভলেন্টিয়াররা বলেন, আমরা ছেলেটিকে দেখেই বুঝতে পারছিলাম পথ হারিয়ে  এদিক-ওদিক ছুটছে। বিপদ হতে পারে বুঝতে পেরেই ওকে উদ্ধার করে নিজেদের কাছে রাখি। নিরাপদে মায়ের হাতে তুলে দিতে পেরে আমরা খুশি।

Loading