October 5, 2025

ঋণের দায়ে আত্মঘাতী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী

সোমালিয়া সংবাদ, আরামবাগ : ব্যবসা মন্দা চলায় ঋণ শোধ করতে পারেননি। আর তাই সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতী হলেন এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। মৃতের নাম সমরেশ চক্রবর্তী (৪৪)। বাড়ি আরামবাগের হরিণখোলার বাখরচক গ্রামে। বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণীতে ও মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনা করে। জানা গেছে, সমরেশ বাবুর একটি ছোট কাপড়ের দোকান ছিল। এছাড়াও স্থানীয় মায়াপুর হাটে কাপড় বিক্রি করতেন। কিন্তু বছর পাঁচেক আগে থেকেই তাঁর ব্যবসা মন্দা চলছিল। বাবা-মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের চিকিৎসার খরচ চালাতে পারছিলেন না। তাই সোনার গহনা বন্ধক রেখে টাকা ধার করতে হয়েছিল। তারপর লকডাউন পড়ে যাওয়ায় দোকানের ভাড়া মেটাতে পারেননি। তখন বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কিছু কিছু করে ঋণ নিয়েছিলেন। কাঠা দশেক জমি ছিল। সেটাও বন্ধক রাখতে হয়েছে। তারপরও ৬২০০০ টাকা কিছুতেই শোধ করতে পারছিলেন না। বন্ধকী সহ প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার মতো বাজারে দেনা হয়ে গিয়েছিল। সমরেশ বাবু স্ত্রী প্রতিমা দেবী জানান, বেশ কয়েক মাস ধরেই খুব চিন্তায় থাকতেন। আমরা বোঝাতাম যে একদিন ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তিনি চিন্তায় ঘুমোতে পারতেন না। তিনি জানান, বুধবার রাতে গরম লাগছে বলে দুয়ারে শুয়েছিলেন। তারপর সকালে উঠে দেখি উপরের ঘরে গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে রয়েছে। পাশে সুইসাইড নোট ছিল। সেখানে সে লিখে গেছে, তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। ঋণ শোধ করতে না পারাতেই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ওই ঋণ মুকুব করে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে গেছে। যদি তাঁরা ঋণ মুকুব না করে দেন তাহলে পরিবারের উদ্দেশ্যে  লিখে গেছে, যেন দোকান  বিক্রি করে দিয়ে ঋণ মিটিয়ে দেওয়া হয়। সমরেশবাবুর মেয়ে সোনালী চক্রবর্তী বলে, বাবার উপার্জনে কোন রকমে সংসার চলত। এখন আমরা একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়লাম। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন, তিনি যেন মায়ের বা আমার কোন একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেন। তা না হলে আমরা একেবারে ভেসে যাব। 

Loading