সোমালিয়া সংবাদ, গোঘাট: রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিদ্যুৎ পরিষেবার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। বিদ্যুতের বিল যেমন দামি হয়েছে তেমনি লোডশেডিংয়ের পরিমাণও অনেকটাই কমেছে। কিন্তু গোঘাটের মানুষ বলছেন অন্য কথা। তাঁদের বক্তব্য, প্রথম প্রথম কিছুদিন লোডশেডিংয়ের দাপট কিছুটা কমেছিল। কিন্তু তারপর আবার সেই লোডশেডিং। তাঁদের সারাবছরই লোডশেডিংকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হয়। এই দীর্ঘদিনের সমস্যা থেকে তাঁদের এতটুকু মুক্তি হয়নি। কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের যুগে লোডশেডিংয়ের কথা ভাবলেই গা শিউরে ওঠে। কারণ বিদ্যুৎ ছাড়া অত্যাধুনিক পরিষেবা কোনভাবেই সম্ভব নয়। সাইবার ক্যাফে থেকে শুরু করে নিজের বাড়িতে ব্যক্তিগত কম্পিউটার- ইন্টারনেট এমনকি অ্যান্ড্রয়েড ফোন সবকিছুই বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু সেই বিদ্যুৎ পরিষেবাই যদি প্রতিদিন ব্যাহত হতে থাকে তাহলে কিভাবে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ সম্ভব তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন। অথচ এই গোঘাট জুড়ে বড় বড় সরকারি অফিস, ব্যাঙ্ক, স্কুল-কলেজ সমস্ত কিছুই রয়েছে। তার থেকেও বড় কথা পড়াশোনা এবং চাকরি এই দুইয়ের প্রয়োজনে বেশিরভাগ গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িতেই কম্পিউটার ঢুকে গেছে। ইনভার্টার বা ইউপিএস যতই থাক না কেন, ঘনঘন লোডশেডিং হলে সেসবও পর্যাপ্ত নয় বলে অনেকেই জানিয়েছেন। আর তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে গোঘাটের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের। তাঁদের বক্তব্য, শুধুমাত্র বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার কারণেই তাঁরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে পড়ছেন। তাই তাঁরা অবিলম্বে বিদ্যুৎ পরিষেবা ২৪ ঘন্টা সচল রাখার দাবি জানিয়েছেন। গোঘাটের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটু বৃষ্টি বা ঝড় হলেই এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর ঝড়-বৃষ্টি থামলেও পরিষেবা চালু করতে অনেক দেরি হয়ে যায়। আর যদি গাছপালা ভেঙে পড়ে তাহলে তো আর কথাই নেই। কত ঘন্টা বা কতদিন পরে বিদ্যুৎ আসবে কেউ জানেন না। আর এখন একটু গরমের হওয়া পড়তেই মাঝেমধ্যেই লোডশেডিং হচ্ছে। তাঁদের আশঙ্কা, গরম যত বাড়বে লোডশেডিং তত বাড়বে। তাঁদের আরও অভিযোগ, বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কোন সমস্যা হলে টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করলেও সমস্যা দ্রুত সমাধান করা হয় না। অথচ এলাকার বেশিরভাগ লাইন কভার কেবিল দিয়ে ঢাকা। তা সত্ত্বেও কেন এত লোডশেডিং তা নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন। পাশাপাশি তাঁদের দাবি, যদি ১১ হাজার লাইন কেবল কভার হয়ে যায় তাহলে ফল্ট অনেক কম হবে। বিদ্যুৎদপ্তরের একটি সূত্র মারফত জানা গেছে, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার জন্যই বিদ্যুৎ বন্টনে এত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া মোবাইল ভ্যানের সংখ্যা ও কর্মীর সংখ্যাও কম। অস্থায়ী কর্মীদের প্রতি বঞ্চনা ভালও কাজের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে বর্তমানে বোরো ধান চাষ চলছে। এই সময় বিদ্যুৎ পরিষেবায় সমস্যা দেখা দিলে ধানবীজ ও ধানচারার ক্ষতি হবে। তাদের অভিযোগ, অভাবী মানুষ বিদ্যুতের বিল দিতে দেরি করলে বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। তাহলে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের জন্য গ্রাহকরা কেন ক্ষতিপূরণ পাবেন না। বিদ্যুতের বিলে অনেক সময় অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া হয়। গ্রাহকদের বক্তব্য, বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হলে কেন এইসব চার্জ মুকুব করা হবে না। পাশাপাশি তাঁরা দাবি জানিয়েছেন, চাষের জমির উপর দিয়ে যাওয়া ১১ হাজার লাইন কভার কেবল দিয়ে ঢাকা হোক। তাহলে চাষিরা নিরাপত্তার দিক দিয়ে বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।
More Stories
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির গোঘাট এক নম্বর আঞ্চলিক কমিটির তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
গোঘাটে দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ ‘রাবণ কাটা’ রথের মেলা
রামকৃষ্ণ সেতু ২৪x৫ ঘন্টা খোলা রাখার আবেদন মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া পর্যন্ত — দুর্গাপুজোয় নির্বিঘ্ন যাতায়াতের স্বার্থে বিধায়ক মধুসূদন বাগের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি